ইতিহাসের পরিসর.... ইতিহাস পাঠের প্রয়ােজনীয়তা (nine ten)
ইতিহাসের পরিসর।
মানুষ কর্তৃক সম্পাদিত সকল বিষয় ইতিহাসের আওতাভুক্ত।
মানুষের চিন্তা-ভাবনা, পরিকল্পনা, কার্যক্রম যত শাখা-প্রশাখায়
বিস্তৃত, ইতিহাসের সীমাও ততদূর পর্যন্ত বিস্তৃত।
যেমন- প্রাগৈতিহাসিক যুগের প্রথম পর্বের মানুষের কর্মকাণ্ড
খাদ্য সংগ্রহের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।
ফলে সে সময় ইতিহাসের পরিসরও খাদ্য
সংগ্রহমূলক কর্মকাণ্ড পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
সময়ের বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস চর্চা ও গবেষণায়
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসৃত হচ্ছে। ফলে ইতিহাসের
শাখা-প্রশাখার সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে, বিস্তৃত হচ্ছে ইতিহাসের সীমানাও।
উনিশ শতকে শুধু রাজনীতি ইতিহাসের বিষয়
হলেও মার্কসবাদ প্রচারের পর অর্থনীতি, সমাজ,
শিল্পকলার ইতিহাসও রচিত হতে থাকে।
এভাবে একের পর এক বিষয় ইতিহাসভুক্ত হচ্ছে আর
সম্প্রসারিত হচ্ছে ইতিহাসের পরিধি ও পরিসর।
ইতিহাস পাঠের প্রয়ােজনীয়তা
মানবসমাজ ও সভ্যতার বিবর্তনের সত্য-নির্ভর বিবরণ হচ্ছে ইতিহাস।
এ কারণে জ্ঞানচর্চার শাখা হিসেবে ইতিহাসের গুরুত্ব অসীম।
ইতিহাস পাঠ মানুষকে অতীতের পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান
অবস্থা বুঝতে, ভবিষ্যৎ অনুমান করতে সাহায্য করে।
ইতিহাস পাঠের ফলে মানুষের পক্ষে নিজের ও নিজদেশ
সম্পর্কে মঙ্গল-অমঙ্গলের পূর্বাভাস পাওয়া সম্ভব।
সুতরাং দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং ব্যক্তি প্রয়ােজনে ইতিহাস পাঠ অত্যন্ত জরুরি।
জ্ঞান ও আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি করে :
অতীতের সত্যনিষ্ঠ বর্ণনা মানুষের জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আর এ বিবরণ যদি হয় নিজ দেশ-জাতির সফল সংগ্রাম ও
গৌরবময় ঐতিহ্যের, তাহলে তা মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে।
একই সঙ্গে আত্মপ্রত্যয়ী, আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে।
সে ক্ষেত্রে জাতীয়তাবােধ, জাতীয় সংহতি সুদৃঢ়করণে ইতিহাস পাঠের বিকল্প নেই।
সচেতনতা বৃদ্ধি করে :
ইতিহাস - জ্ঞান মানুষকে সচেতন করে তােলে।
উত্থান-পতন এবং সভ্যতার বিকাশ ও পতনের কারণগুলাে
জানতে পারলে মানুষ ভালাে-মন্দের পার্থক্যটা সহজেই বুঝতে পারে।
ফলে সে তার কর্মের পরিণতি সম্পর্কে সচেতন থাকে ।
দৃষ্টান্তের সাহায্যে শিক্ষা দেয় :
ইতিহাসের ব্যবহারিক গুরুত্ব অপরিসীম।
মানুষ ইতিহাস পাঠ করে অতীত ঘটনাবলির
দৃষ্টান্ত থেকে শিক্ষা নিতে পারে । ইতিহাসের শিক্ষা
বর্তমানের প্রয়ােজনে কাজে লাগানাে যেতে পারে ।